পবিত্র কোরআনের সর্বশেষ সুরা‘সুরা’ নাস। এই সুরাটির অনেক ফজিলতের কথা হাদিসে এসেছে। বিশেষ করে কোরআনের সর্বশেষ তিন সুরা—ইখলাস, ফালাক ও নাসকে একত্রে ‘তিন কুল’ বলা হয়। এই তিন সুরার শুরুতে আরবি ‘কুল’ শব্দ থাকার কারণে এই নামে ডাকা হয়। এ তিনটি সুরা আসমানি রক্ষাকবচ। এই তিনটি সুরা পাঠ করলে যাবতীয় অনিষ্ট থেকে মুক্ত থাকার কথা বলেছেন রাসুলুল্লাহ (সা.)।
শরীর সুরক্ষার আমল
রাসুলুল্লাহ (সা.) সকাল-সন্ধ্যায় তিন কুলের আমল করতেন। সাহাবিদের আমল করার তাগিদ দিতেন। এক সাহাবি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাকে বলেছেন, তুমি সন্ধ্যায় ও সকালে তিনবার সুরা ইখলাস, সুরা নাস ও ফালাক পড়বে। এতে তুমি যাবতীয় অনিষ্ট হতে রক্ষা পাবে।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৫০৮২)
আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘নবি (সা.) প্রতিরাতে যখন বিছানায় যেতেন; তখন (মোনাজাতে হাত তোলার মতো করে) দুই হাত মেলাতেন। এর পর হাতের ওপর তিন কুল (সুরা ইখলাস, ফালাক ও নাস) পাঠ করতেন। এর পর হাতে ফুঁ দিতেন। এর পর দুই হাত দিয়ে শরীরের যতটুকু অংশে সম্ভব হাত বুলিয়ে নিতেন। মাথা, চেহারা এবং শরীরের ওপরের ভাগ থেকে শুরু করতেন। এভাবে (পূর্ণ কাজটি) তিনি তিনবার করতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ৫০১৭)
আরও পড়ুন: জীবন বদলে দেবে যে পাঁচ সুন্নত
আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন অসুস্থ হতেন, তখন তিন কুল পড়ে (হাতে) ফুঁ দিতেন এবং (নিজের শরীরে) হাত বুলাতেন। যখন তিনি অন্তিম শয্যায় শায়িত ছিলেন, তখন আমি তিন কুল পড়ে ফুঁ দিতাম এবং তার হাতে হাত বুলাতাম।’ (বুখারি, হাদিস: ৫৭৫৭)
উপরোক্ত হাদিসগুলো বিশ্লেষণ করলে দেখতে পাই, সারা দিনের নিরাপত্তায় তিন সময়ে ‘তিন কুল’ পড়ার কথা হাদিসে এসেছে। তিন কুল হলো—
সুরা ইখলাস।
সুরা ফালাক।
সুরা নাস।
আর তিন সময় হলো—
ফজর ও মাগরিবের পর তিনবার করে।
জোহর, আসর ও ইশার পর একবার করে।
রাতে শোয়ার আগে বিছানায় তিন কুল তিনবার করে পাঠ করে হাতে ফুঁক দিয়ে হাত সারা শরীরে মুছবে।
এ ছাড়াও অসুস্থ অবস্থায় বা বিপদের সময়ও এর আমল করা যেতে পারে। (আবু দাউদ, হাদিস: ১৫২৩, তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৭৫)