যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টির এমপি ও সিটি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিকের খালা তথা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের সদস্যরা সেদেশের নির্বাচনের সময় প্রধানমন্ত্রী স্যার কেইর স্টারমারের হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন। এমনকি দলটির যুক্তরাজ্য শাখার কর্মীরা ছায়া মন্ত্রিসভায় থাকার সময় স্টারমারের জন্য তহবিল সংগ্রহের উদ্দেশ্যে নৈশভোজের আয়োজনও করেছিলেন।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লেবার পার্টির নেতা কেইর স্টারমারের জন্য হলবর্ন ও সেন্ট প্যানক্রাসে নির্বাচনি প্রচারে আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার গুরুত্বপূর্ণ কর্মীরা অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে সংগঠনের সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরীও ছিলেন।
স্টারমারের আসনটি টিউলিপ সিদ্দিকের হ্যাম্পস্টেড আসনের কাছাকাছি হওয়ায় এই সহযোগিতা আরও নজর কেড়েছে। আওয়ামী লীগের কর্মীরা দরজায় দরজায় গিয়ে স্টারমারের নামসংবলিত লেবার পার্টির লিফলেট বিলি করেছিলেন এবং তার পার্টিকে সমর্থন করে প্ল্যাকার্ডও বহন করেছিলেন। তারা একই দিনে টিউলিপ সিদ্দিকের হয়েও প্রচার চালিয়েছেন। প্রচার দলের মধ্যে এমন কর্মীও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন যারা প্রকাশ্যে নিজেদের আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে দাবি করে এসেছেন।
দলটির সদস্যরা জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে তহবিল সংগ্রহের সময় একটি রেস্তোরাঁয় আবদুল আহাদ চৌধুরীর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন স্টারমার। গত বছরের জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের দিন তিনি স্টারমারের সঙ্গে করমর্দনের একটি ছবিও পোস্ট করেছিলেন, যার ক্যাপশন ছিল, ভবিষ্যৎ প্রধানমন্ত্রী মাননীয় কেইর স্টারমার।
এ ছাড়া ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনের সময় স্টারমার ইলফোর্ডে লেবার পার্টির প্রার্থী স্যাম ট্যারির পক্ষে প্রচার চালাতে যান। ওই সময় আব্দুল শহীদ শেখ নামে একজনের সঙ্গে ছবি তোলেন তিনি। শহীদ শেখ নিজেকে আওয়ামী লীগের জনসংযোগে কাজ করেন বলে জানান। এই লোক বর্তমানে উপপ্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনারের সঙ্গেও সম্প্রতি দেখা করেছেন।
টিউলিপ সিদ্দিকের নির্বাচনি প্রচারে আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় সদস্যরা বিভিন্ন সময়ে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ শাজিদুর রহমান ফারুক এবং অফিস সেক্রেটারি শাহ শামীম আহমেদসহ আরও অনেকে টিউলিপের জন্য হ্যাম্পস্টেড ও কিলবার্নে প্রচারে অংশ নেন।
আওয়ামী লীগের সদস্যরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টিউলিপের প্রতি জনসমর্থন প্রকাশ করলেও, তারপর থেকে তার পক্ষে প্রচার চালিয়েছেন কি না তা স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের অর্থপাচার প্রতিরোধে নিয়োজিত সংস্থা যখন তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং লেনদেনের বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে তখন আওয়ামী লীগের সঙ্গে লেবার পার্টির সম্পর্ক নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন সামনে এসেছে।
সূত্র: দ্য টেলিগ্রাফ