কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে যেন ‘ইয়াবার মেলা’ বসেছে। নতুন-পুরাতন মাদক কারবারিরা মিলে এই মেলার আসর বসিয়েছে।
‘ইয়াবা মেলা’ চালু করতে গিয়ে রাজনৈতিক বিশ্বাস ভুলে কারবারিরা একটি প্লাটফর্মে বসে ইয়াবার রমরমা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জোরালো অভিযোগ তুলেছেন টেকনাফের সাধারণ মানুষ। এজন্য পুলিশ ও বিজিবিকেই দায়ী করছেন তারা।
তাদের অভিযোগ, টেকনাফ উপজেলার সাবরাং, শাহপরীর দ্বীপ, জাদিমুরা, লেদা, রঙিখালী, হ্নীলা, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পুরনো ইয়াবা কারবারিরা যেমন নতুন করে চাঙ্গা হয়েছে, একইভাবে তাদের শেল্টার দিতে যোগ হয়েছে নতুন কারবারি।
স্থানীয়দের মতে, এসব মাদক কারবারিরা ওপেন সিক্রেট ব্যবসা করছে। তাদের চলাফেরা, ঘোরাফেরা ব্যবসার লেনদেন সবই প্রকাশ্যে। যে সব ব্যবসায়ী গোপনে ইয়াবা ব্যবসা করতো তারাও প্রকাশ্যে, সবার সামনে এখন দৌড়ঝাঁপ, প্রভাব বিস্তার করে বেড়াচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক টেকনাফের সাধারণ মানুষের অভিযোগ, মাদক কারবারিদের বিচরণ ও দাপটে এলাকায় এখন অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। দেখতেও ভালো লাগছে না, কিছু বলাও যাচ্ছে না!
উপজেলার হ্নীলা সীমান্তের বাসিন্দারা জানান, হোয়াব্রাং, হ্নীলা এক নাম্বার স্লুইস গেইট এলাকা, চৌধুরী পাড়া, লেদ, জাদিমোরা থেকে নিয়মিত মিয়ানমার থেকে ইয়াবা পাচার হয়ে ঢুকছে হ্নীলা
ইউনিয়ন এলাকায়। পথ হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে হ্নীলার উত্তরের বিল। প্রতিদিন ভোর রাতে বস্তাভর্তি ইয়াবা পাচার হয়ে উত্তরের বিলসহ কয়েকটি ঘরে মজুদ করে রাখা হয়। পরে ওই ঘরগুলো থেকে খালাস হয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্নপ্রান্তে।
এলাকাবাসীর দাবি, যারা মুল ইয়াবা কারবারি তারা সবারই চেনা। তারা অনেকটা প্রকাশ্যে ইয়াবার লেনদেন করছে।
বিভিন্ন সূত্র বলছে, এসব ইয়াবা কারবারির সাথে যোগসাজশ আছে গুটিকয়েক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যের।
সূত্রমতে, কিছুদিন আগে টেকনাফ আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপস্থিত সদস্যরা সরাসরি ইয়াবার সাথে জড়িতেদের কথা উল্লেখ করেছেন। ওই সভায় বিএনপি নেতা শাহাদত ইয়াবা পাচারের ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দোষারোপ করেন।
বিএনপি নেতা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, বিজিবি চাইলে সীমান্তে ইয়াবা দূরের কথা, একটা পিঁপড়াও ঢুকতে পারবে না। কিন্তু বিজিবি সেভাবে সীমান্তে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে না মাদক পাচারের বিরুদ্ধে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সীমান্তবাসী মানুষের দাবি, পুলিশ ইয়াবার বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয় রয়েছে। যে কারণে ইয়াবা কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
টেকনাফে দায়িত্বরত -২ বিজিবির এক কর্মকর্তা জানান, তারা সীমান্তে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। টহলও জোরদার করেছেন। প্রয়োজন ছাড়া সীমান্তে অপরিচিত মানুষের চলাফেরাও সীমিত রাখা হয়েছে।
তবে কক্সবাজার জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন মাদকের বিরুদ্ধে তাদের উদাসীনতার কথা। তবে পুলিশের এই কর্মকর্তা খুব অল্প সময়ের মধ্যে বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করার ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
সুত্র: আমার দেশ