কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরে মাছ শিকারের সময় মায়ানমারের জলসীমা অতিক্রম করায় রোহিঙ্গাসহ ২৬ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। বিজিবির তৎপরতায় দীর্ঘ এক মাস পর আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা রোহিঙ্গাসহ ২৬ বাংলাদেশি জেলেকে ফেরত আনা হয়েছে।
দীর্ঘদিনের মধ্যস্থতায় শনিবার (১৫ মার্চ) বিকেল ৫টায় টেকনাফ পৌরসভার পুরাতন মায়ানমার ট্রানজিট জেটি ঘাটে পৌঁছায় জেলেরা।
ফেরত আসা জেলেরা জানান, সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে মাছ শিকারের সময় পানির স্রোতে মায়ানমার জলসীমানা অতিক্রম কালে আরাকান আর্মি গুলিবর্ষণ করে তাদের আটক করে নিয়ে যায়। তাদের হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার পর রাতে এবং দিনে রুমে তালা মেরে রেখেছে। দীর্ঘ একমাস পর বিজিবির তৎপরতার মাধ্যমে শনিবারে ফেরত আনা হয়। তাদের ট্রলার ও জালগুলো ফেরত দেয়নি।
টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, বিভিন্ন সময়ে টেকনাফ পৌরসভা কায়ুকখালী নৌ ঘাটের এবং শাহপরীর দ্বীপ জালিয়া পাড়ার নৌ ঘাট থেকে কয়েকটি ট্রলার নাফ নদী ও সেন্টমার্টিনের দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর থেকে মাছ শিকারের সময় ২৬ জেলেকে মায়ানমারের জলসীমা অতিক্রম করায় অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে আটক করে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। পরবর্তী সময়ে মায়ানমারে আটকে থাকা জেলেদের ফিরিয়ে আনতে জেলে পরিবার বিজিবির হস্তক্ষেপ কামনা করায় টেকনাফ ব্যাটালিয়ন কর্তৃক আরাকান আর্মির সঙ্গে দীর্ঘ মধ্যস্থতার পর শনিবার বিকালে ২৬ জন জেলেদের ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। দীর্ঘ দিন যাবৎ আরাকান আর্মির নিকট বাজেয়াপ্ত একটি মাছ ধরার নৌকাও ফেরত আনা সম্ভব হয়েছে।
তিনি বলেন, ফেরত আনা জেলেদেরকে পরিবারের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ৫ মার্চ সেন্টমার্টিনের ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে মাছ শিকারের সময় মায়ানমার জলসীমা অতিক্রমকালে ৫৬ জন জেলেকে আটক করে নিয়ে যায় আরাকান আর্মি। পরবর্তী সময়ে ৬টি ট্রলারে থাকা মাছ ও খাদ্য দ্রব্য নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে জেলেদের।
এদিকে, দেশের নাগরিকদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিজিবি সর্বদা নিবেদিত, সতর্ক ও সদা প্রস্তুত। সীমান্তে বিজিবির পেশাদারত্ব, কৌশল, দায়িত্ববোধ এবং দেশপ্রেমের দৃষ্টান্তের নজির অনেক। তাই বিজিবি সীমান্তের যেকোনো সংকটেই জনসাধারণের আস্থার জায়গা। আটক জেলেদের সফল প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে আবারও সর্বসাধারণের আস্থার কার্যকরী প্রতিফলন ঘটল।