সহজ নয় সীমান্ত সাংবাদিকতা বলেন, টেকনাফের সীমান্তের আ.রহমান। তুলে ধরেছেন সীমান্তের সংবাদ সংগ্রহের অভিজ্ঞতা।
২০১৬ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। সেই মুহূর্ত থেকে আমার সাংবাদিকতা পুরোপুরি নতুন মাত্রায় পৌঁছে যায়, যদিও আমি আগে থেকেই এ পেশায় যুক্ত ছিলাম। ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের আরও বড় ঢল নামে, তখন বিশ্বের সমস্ত মিডিয়ার চোখ বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত টেকনাফের দিকে। সেই সময় থেকে আমার ঘুম হারাম হয়ে যায়। বাস্তুচ্যুত মানুষের আর্তনাদ, হাহাকার ও করুণ চিত্র আমার সাংবাদিকতাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যায়।
যদিও তখন বাস্তুচ্যুত হওয়া শরণার্থী না দেখলেও,শরণার্থী গল্প আমি বইয়ে পড়েছি, সিনেমায় দেখেছি। কিন্তু বাস্তবে এত বেদনাদায়ক দৃশ্য দেখার প্রস্তুতি ছিল না। সহায়-সম্বল হারিয়ে, প্রাণে বাঁচতে কর্দমাক্ত মাটির ওপর সন্তানকে নিয়ে দৌড়াচ্ছে অসংখ্য মা-বাবা—এ দৃশ্য আমাকে গভীরভাবে স্পর্শ করে। সেই সময় প্রতিদিন ভোর ৬টায় বের হয়ে রাত ১-২টায় বাসায় ফিরতাম। তখন হাতে গোনা মাত্র কয়েকজন সাংবাদিক সীমান্তে সক্রিয় ছিল। মাসব্যাপী এই নিরবচ্ছিন্ন পরিশ্রমের ফলে ধীরে ধীরে দেশি-বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে পরিচিতি বাড়তে থাকে এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ার সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পাই। পরে আল জাজিরা, বিবিসি, বিবিসি রেডিও, এপি, ডয়চে ভেলে ও বেনারনিউজের মতো আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য হয়, যা এখনও চলমান।
তখনও ভাবিনি রোহিঙ্গা ইস্যু এত দূর গড়াবে। এই পথ ছিল কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। কারণ আমি চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি নিরবচ্ছিন্নভাবে। তবে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় নিন্দুকদের বাঁধার মুখেও পড়তে হয়েছে বারবার। এমনকি গোয়েন্দা সংস্থা, এপিবিএন,পুলিশ, র্যাব ও ডিজিএফআই-এর বাধাও পোহাতে হয়েছে।