শিরোনাম :
বড় ছেলে জিহাদ এর জন্মদিনে বাবা শামসুর অনুভূতি! মিথ্যা পরিচয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন আরসা নেতা আতাউল্লাহ গুম কমিশনে গিয়ে তথ্য দিলেন সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগ নেতা ফেরদৌস কে আইনের আওতায় আনার দাবী অপহরণ নাটক সাজিয়ে টেকনাফে সাংবাদিকসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা  সাবেক এমপি বদির সঙ্গে বিরোধে ক্রসফায়ারে খুন কাউন্সিলর একরাম টেকনাফের মাদক কারবারি জাহাঙ্গীর অ’স্ত্রসহ গ্রেফতার কোস্ট গার্ড-ডাকাতদলের গোলাগুলি, অস্ত্র-গুলিসহ একজন আটক পালংখালী জামায়াতের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন কক্সবাজার কারাগারের জেলার আবু মুছার নেতৃত্বে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব! 
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ০৬:৪৯ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম.... বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে সকল প্রকার সংবাদ পেতে আমাদের ওয়েবসাইট www.teknaftv.com ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!

বাল্যবিয়েতে এশিয়ায় শীর্ষ স্থানে আছে বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক / ২৬ বার দেখা হয়েছে
আপডেট সময় : শনিবার, ৮ মার্চ, ২০২৫

বাল্যবিয়ের তালিকায় এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান সবার শীর্ষে বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ। আর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয়েছে এমন দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান অষ্টম।

 

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে ইউনিসেফ, ইউএন উইমেন ও প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল প্রকাশিত ‘গার্লস গোলস: হোয়াট হ্যাজ চেঞ্জড ফর গার্লস? অ্যাডোলেসেন্ট গার্লস রাইটস ওভার ৩০ ইয়ার্স’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

 

শনিবার (৮ মার্চ) এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০-২৪ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে ৫১ দশমিক ৪ শতাংশেরই বিয়ে হয়েছে ১৮ বছর হওয়ার আগে। এর ফলে কন্যাশিশু তথা মেয়েদের স্থায়ী দারিদ্র্যের চক্রে আটকে যেতে দেখা যায়, তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি হয়। তাদের সম্ভাবনার বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় ও মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক ঝুঁকিতে থাকায় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হয়। প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বজুড়ে বাল্যবিয়ে ও অল্প বয়সে সন্তানধারণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। বাংলাদেশে ২০-২৪ বছর নারীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ নারী ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই সন্তান জন্ম দিচ্ছেন। তাছাড়া বাংলাদেশে ১৫-১৯ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েদের ২৮ শতাংশ বিগত ১২ মাসের মধ্যে তাদের সঙ্গীর দ্বারা শারীরিক বা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছে। আর ১৫-১৯ বছর বয়সী বিবাহিত কিশোরী মেয়েদের মধ্যে মাত্র ৪৭ শতাংশ জেনে বুঝে প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

 

ইউনিসেফ জানায়, ১৯৯৯ বেইজিং ঘোষণায় যেসব অঙ্গীকার করা হয়েছিল, ৩০ বছর পরে এসে সেসব অঙ্গীকার বাস্তবায়নে দেশগুলো কতটা অগ্রগতি অর্জন করেছে, তার পর্যালোচনা করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, মেয়েদের জন্য অনেক ক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। শিক্ষায় বিনিয়োগের সুফল এসেছে, মেয়েদের স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রেও উন্নতি হয়েছে। এখন কন্যাশিশুরা আগের তুলনায় তেমন একটা বাল্যবিয়েের শিকার হয় না কিন্তু বাংলাদেশের মতো বিভিন্ন দেশ এখনও এই ক্ষেত্রে বেশ পিছিয়ে। বাংলাদেশে ৫০ শতাংশের বেশি কন্যাশিশু এই ক্ষতিকর চর্চার শিকার হচ্ছে, বাল্যবিয়ের এই হার এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে বেশি।

 

প্রতিবেদনে বিশেষভাবে উদ্বেগ জানানো হয়েছে যে, কোনো দেশই কিশোরী বয়সী মেয়েদের উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ১৬টি এসডিজি লক্ষ্যের অর্ধেকও পূরণ করতে পারেনি। সেকারণে ২০৩০ এসডিজি এজেন্ডা অর্জনের জন্য আর মাত্র পাঁচ বছর বাকি থাকায় এক্ষেত্রে নতুন করে গুরুত্ব আরোপ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স বলেন, বাংলাদেশে কিশোরী মেয়েরা একটি অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে চায়, যেখানে তারা নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা পাবে এবং দেশের উন্নতিতে সহযোগিতা করতে পারবে। তা সত্ত্বেও নানা প্রতিবন্ধকতা ও বৈষম্য তাদেরকে আটকে রাখছে এবং তাদের দেশও এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জীবন দক্ষতা ও ডিজিটাল শিক্ষা অর্জনের সুযোগ নিশ্চিত করা যেমন জরুরি, তেমনই জরুরি উচ্চ হারে বিদ্যমান শিশুবিয়ে এবং কন্যাশিশু ও নারীদের ওপর সহিংসতা মোকাবিলা করা; কেননা এর ফলে অল্প বয়সে ও বিপজ্জনকভাবে সন্তানধারণের ঘটনা ঘটে এবং প্রায়ই প্রাণ হারায় ছোট্ট-বয়সী মা ও তার সন্তান।

 

তিনি আরও বলেন, এই আন্তর্জাতিক নারী দিবস সব বাধা দূর করে সবার জন্য সমান সুযোগ ও আশার সঞ্চার করুক। আমাদের অবশ্যই কন্যাশিশু তথা মেয়েদের বক্তব্য তুলে ধরতে হবে এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশে পরিবর্তনের জন্য এখন গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়, তরুণ নারী ও পুরুষেরা আরও ভালো একটি ভবিষ্যৎ গড়ার ডাক দিয়েছে- তাদের এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা সরকারের প্রতি কিশোরীদের স্বাস্থ্য সেবা, সমাজকর্মী বা সমাজকল্যাণমূলক কাজে নিয়োজিত জনবল আরও শক্তিশালী করা, শিক্ষা ও পুষ্টিতে বিনিয়োগ করা এবং সব মেয়েদের জন্য জীবন দক্ষতা অর্জন ও ডিজিটাল শিক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানাচ্ছি।

 

বাংলাদেশে ইউএন উইমেনের প্রতিনিধি গীতাঞ্জলি সিং বলেন, বেইজিং ঘোষণার ৩০ বছর পূর্তি স্মরণের সঙ্গে সঙ্গে আমরা নারী ও কন্যাশিশুদের অধিকার নিশ্চিতকরণে অগ্রগতিও উদযাপন করছি। তবে এই অগ্রগতি অর্জনের ধারা যে ধীরগতিসম্পন্ন, অমজবুত ও অস্থিতিশীল তাও স্বীকার করে নিচ্ছি। বাংলাদেশে এখনও অনেক কন্যাশিশু স্কুলে যায় না, তারা ক্ষতিকর চর্চা ও সহিংসতার ঝুঁকিতে রয়েছে। তাদের সম্ভাবনার বিকাশের জন্য ‘অল-হ্যান্ডস-অন-ডেক’ এপ্রোচ অর্থাৎ এখন থেকেই সবাই মিলে কাজ করার মানসিকতা নিয়ে এগিয়ে আসা আবশ্যক। তাদের ক্ষমতায়ন ও নেতৃত্বের দক্ষতা তৈরির জন্য বিনিয়োগ করাটা কেবল সঠিক নয় বরং একটি স্মার্ট পদক্ষেপও বটে।

 

বাংলাদেশে কিশোরী কন্যাশিশুদের মাধ্যমিক পর্যায়ের লেখাপড়া সম্পন্ন করার হার ৫৯ দশমিক ২২ শতাংশ। প্রতিবেদনে কিশোরী মেয়েদের শিক্ষার ক্ষেত্রে ২০৩০ এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে সরকার ও সব অংশীজনদের উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্বে যে সাতটি দেশে কিশোরী ও তরুণ নারীদের ডিজিটাল দক্ষতার হার ২ শতাংশ বা তার চেয়ে কম সে সব দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ।

 

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর কবিতা বোস বলেন, এটা দেখে আমি খুব খুশি যে বাংলাদেশ কিশোরী মেয়েদের সন্তান জন্মদানের হার কমানো, সন্তান জন্মের সময় দক্ষ সেবাদাত্রীর উপস্থিতি বৃদ্ধি এবং মেয়ে ও তরুণ নারীদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য বড় ধরনের প্রচেষ্টা নিয়েছে। প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষায় মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি ও তাদের এসব পর্যায়ের শিক্ষা সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে উন্নতিও দৃশ্যমান । তিনি আরও বলেন, অবশ্য শিক্ষার গুণগত মান এখনও একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়েছে। ডিজিটাল দক্ষতার ক্ষেত্রে কন্যাশিশু ও তরুণ নারীরা উদ্বেগজনকভাবে পিছিয়ে রয়েছে। শিশুবিয়ে, অল্পবয়সে ও জোরপূর্বক বিয়ের হার কমানো, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা পাওয়ার সুযোগ বৃদ্ধি এবং কিশোরীদের অধিকার নিশ্চিতকরণ ও জনপরিসরে মেয়েদের নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এখনও অনেক কিছু করার রয়েছে। আমরা সবাই সমান না হওয়ার আগ পর্যন্ত ‘অল গার্লস স্ট্যান্ডিং স্ট্রং ক্রিয়েটিং গ্লোবাল চেঞ্জ’ (সকল মেয়েদের নিজ পায়ে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে গোটা বিশ্বে পরিবর্তন আনার জন্য প্রস্তুত করার)-এর লক্ষ্য নিয়ে কন্যাশিশু ও তরুণ নারীদের ক্ষমতায়নে কাজ করছে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এজাতীয় আরো নিউজ দেখুন
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!