২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় বিডিআর হত্যাকাণ্ডের তদন্তে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ, ঢাকা দক্ষিণের সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসসহ ১৫ জনকে তলব করেছে জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন। অন্যরা হলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারেক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সেলিম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মির্জা আজম, বাহাউদ্দিন নাছিম, বিডিআরের ৪৪ ব্যাটালিয়নের তৎকালীন অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মুহাম্মদ শামসুল আলম, সাবেক ডিজিএফআইপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মোল্লা ফজলে আকবর, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) মঈন উ আহমেদ, সাবেক র্যাবপ্রধান হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা আব্দুল কাহার আকন্দ, সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক নূর মোহাম্মদ এবং সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম।
শনিবার কমিশনের পক্ষ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আগামী সাত দিনের মধ্যে কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হয়ে অথবা অনলাইনে তাদের বক্তব্য পেশ করতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সাক্ষ্য প্রদান অপরিহার্য হয়ে পড়ায় উল্লিখিত ব্যক্তিরা সরাসরি কমিশনের কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে অথবা অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সাক্ষ্য দিতে পারবেন। আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে কমিশনকে সাক্ষ্য গ্রহণ কার্যক্রম শেষ করতে হবে। এ জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের সাত দিনের মধ্যে সাক্ষীদের সাক্ষ্যদানের প্রস্তাবিত সময়সূচি ফোন, ই-মেইল বা চিঠির মাধ্যমে কমিশনকে জানাতে হবে। অসহযোগিতার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেছে কমিশন।
এর আগে গত বুধবার পিলখানা হত্যাকাণ্ডবিষয়ক জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের ওয়েবসাইটে তদন্ত কার্যক্রমে সহায়ক তথ্য দিয়ে কমিশনকে সাহায্য করার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কমিশন। এতে বলা হয়, বিডিআর হত্যাকাণ্ডবিষয়ক জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের ওয়েবসাইটের (bdr-commission.org) মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রমে সহায়ক তথ্য দিয়ে কমিশনকে সাহায্য করার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করা হলো।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের ৪৯ দিনের মাথায় ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি সংঘটিত নারকীয়, নৃশংস ও মর্মান্তিক ওই ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনার পর হত্যা ও বিস্ফোরণ আইনে করা পৃথক মামলায় ১৩৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া আরও অন্তত ২২৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে। ডেথ রেফারেন্স ও সাজাপ্রাপ্তদের আপিলের বিচারকাজ চলছে উচ্চ আদালতে।