শিরোনাম :
বড় ছেলে জিহাদ এর জন্মদিনে বাবা শামসুর অনুভূতি! মিথ্যা পরিচয়ে ফ্ল্যাট ভাড়া নেন আরসা নেতা আতাউল্লাহ গুম কমিশনে গিয়ে তথ্য দিলেন সাবেক সেনাপ্রধান ইকবাল করিম ভূঁইয়া বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগ নেতা ফেরদৌস কে আইনের আওতায় আনার দাবী অপহরণ নাটক সাজিয়ে টেকনাফে সাংবাদিকসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা  সাবেক এমপি বদির সঙ্গে বিরোধে ক্রসফায়ারে খুন কাউন্সিলর একরাম টেকনাফের মাদক কারবারি জাহাঙ্গীর অ’স্ত্রসহ গ্রেফতার কোস্ট গার্ড-ডাকাতদলের গোলাগুলি, অস্ত্র-গুলিসহ একজন আটক পালংখালী জামায়াতের ইফতার মাহফিল সম্পন্ন কক্সবাজার কারাগারের জেলার আবু মুছার নেতৃত্বে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব! 
শুক্রবার, ২১ মার্চ ২০২৫, ০৭:২০ পূর্বাহ্ন
বিজ্ঞপ্তি :
আমাদের ওয়েবসাইটে আপনাকে স্বাগতম.... বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে সকল প্রকার সংবাদ পেতে আমাদের ওয়েবসাইট www.teknaftv.com ভিজিট করুন। ধন্যবাদ!

আলেমদের সান্নিধ্যে ধর্মীয় জীবনের উন্নতি

টেকনাফ টিভি ডেস্ক / ৮৮ বার দেখা হয়েছে
আপডেট সময় : রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪

পবিত্র কোরআনের একাধিক আয়াতে মহান আল্লাহ দুনিয়ার ভালোবাসায় মত্ত থাকার এবং পরকালকে ভুলে যাওয়ার নিন্দা করেছেন। দুনিয়ার ভালোবাসায় মত্ত থাকার অর্থ হলো দ্বিনদারির ওপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দেওয়া এবং আখেরাতের চিন্তা ত্যাগ করা। দুনিয়ার প্রতি আসক্ত ব্যক্তিরা পার্থিব জীবনের অর্জনকেই কেবল সাফল্য মনে করে।

 

দুনিয়ার ভালোবাসায় মত্ত হয়ে থাকা এবং পরকাল থেকে বিমুখ হয়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো আলেমদের সান্নিধ্যে না থাকা। আলেম সান্নিধ্য মানুষকে নানাভাবে আল্লাহমুখী করে। যেমন দ্বিনি জ্ঞান লাভ, আল্লাহর ভালোবাসার প্রতি আগ্রহ তৈরি, দুনিয়াবিমুখ জীবনের রূপরেখা সম্পর্কে অবগত হওয়া ইত্যাদি।

 

সাধারণ মানুষের উচিত, আলেমদের সান্নিধ্য লাভের জন্য কিছু সময় বের করে নেওয়া। অন্তত ৪০ দিনের জন্য হলেও। দুঃখের বিষয় হলো মানুষ দৈহিক রোগের জন্য চাকরি থেকে ছুটি নেওয়া, অর্থ ব্যয় করা, প্রয়োজনে চাকরি ত্যাগ করার মতো পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করে না। কিন্তু আত্মিক ও আধ্যাত্মিক চিকিৎসা নিয়ে মানুষের কোনো ভাবান্তর নেই। আমি অত্যন্ত আশার সঙ্গে বলতে পারি, কেউ যদি আল্লাহপ্রেমী ও বিশুদ্ধ জ্ঞানের অধিকারী আলেমদের কাছে অন্তত ৪০ দিন অবস্থান করে কেউ যদি আত্মার রোগের চিকিৎসা করে তবে তার যাবতীয় সংশয় ও প্রশ্নের অবসান হবে।

 

মানুষের যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয় চাহিদা ও প্রয়োজনের আলোকে। যেহেতু মানুষের মনে দৈহিক রোগ থেকে আরোগ্য লাভের তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকে, তাই মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করে, সম্ভাব্য সব ক্ষতিও মেনে নেয়। অন্যদিকে আত্মিক রোগের ব্যাপারে তারা হয় সম্পূর্ন উদাসীন। কেননা এই রোগ থেকে মুক্তির ব্যাপারে তাদের কোনো চিন্তা নেই। যদি দৈহিক রোগের মতো আত্মিক রোগ থেকে মুক্তির জন্য মানুষ চেষ্টা করত, তবে কতই না উত্তম হতো!

 

একজন আধ্যাত্মিক চিকিৎসকের কাছে ৪০ দিন অবস্থান করা কি খুব কঠিন কিছু? চেষ্টা করুন এই সময়টুকু বের করার। এরপর দ্বিন ও ইসলামের আলোচনা ও সমালোচনার প্রয়োজন হবে না। কোনো একজন কবি বলেন, ‘কামেল পিরের সাক্ষাৎ সব প্রশ্নের উত্তর। বিনা বাক্যব্যয়ে তোমার যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’

 

কারও বিশ্বাস না হলে বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখা যেতে পারে। মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি (রহ.) বলেন, ‘সূর্যের প্রমাণ সূর্য নিজেই। এরপরও যদি তোমার প্রমাণের প্রয়োজন হয় তবে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও।’

 

আমি আলেমদের সান্নিধ্যে ৪০ দিন থাকার যে কথা বলছি তা হাদিসের মর্মানুসারেই বলেছি। তা হলো, যে ব্যক্তি খাঁটি নিয়তে ৪০ দিন নিজেকে আল্লাহর কাজে উৎসর্গ করে, আল্লাহ তার অন্তর থেকে হিকমত বা প্রজ্ঞার নহর জারি করে দেন।

 

মনে রাখতে হবে, কোনো জাগতিক উদ্দেশে আলেম বা পিরের সান্নিধ্যে থাকলে তাতে পরকালের কোনো উপকার হবে না। কোনো এক গ্রাম্য লোককে একজন আলেম বলেছিলেন, তুমি একাধারে ৪০ দিন নামাজ পড়লে আমি তোমাকে একটি মহিষ দেব। সে বলল, খুব ভালো। ৪০ দিন পর গ্রাম্য লোকটি এসে আলেমকে বলল, আমি একাধারে ৪০ দিন নামাজ পড়েছি, আমাকে মহিষ দিন। তখন আলেম ব্যক্তি বললেন, আমি তোমাকে মহিষ দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলাম এ জন্য যে, নামাজ পড়তে পড়তে তুমি নামাজে অভ্যস্ত হয়ে যাবে। এরপর তুমি আর কখনো নামাজ ত্যাগ করবে না। সে বলল, আচ্ছা, তুমি তাহলে আমাকে ধোঁকা দিয়েছ? তবে যাও, আমিও অজু ছাড়াই ঢুঁ মেরেছি, তোমাকে ফাঁকি দিয়েছি।

 

 

মোটকথা, আলেমদের কাছে রুটি খাওয়ার নিয়তে থাকবে না, বরং রুটি নিজ উপার্জন থেকে খাবে। এতে আলেমদের কাছে থাকার কিছুটা হলেও মূল্য হবে।

দ্বিনের অর্থ ব্যয় করার বিশেষ উপকার ও কল্যাণ আছে। একবার আমার পীর ও মুরশিদের নির্দেশে সর্বসাধারণের কল্যাণের কথা চিন্তা করে আমি একটি পুস্তিকা প্রকাশ করি। আমার ইচ্ছা ছিল আমি তা বিনামূল্যে বিতরণ করব। কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, বিনামূল্যে নয়, কিছু মূল্য নিয়ে তা বিতরণ কোরো। কেননা বিনামূল্যের কোনো কিছুর মূল্যায়ন থাকে না।

 

আলেমদের সান্ন্যিধ্যে যাওয়ার আগে নিয়ত শুদ্ধ করে, সরল বিশ্বাস নিয়ে এবং বাজে ঝামেলা মুক্ত হয়ে যাওয়া আবশ্যক। যেকোনো নেক কাজ এভাবেই করা উচিত। এতে কিছুটা হলেও সুফল পাওয়ার আশা করা যায়। একবার মুজাফফর নগরের একজন তহশিলদার এক ব্যক্তিকে আমার কাছে নিয়ে এসে বললেন, এই ব্যক্তির মনে ধর্মীয় ব্যাপারে জটিল জটিল সংশয় আছে। আপনি তাকে কিছু বুঝিয়ে দিলে খুব উপকার হতো, এই ব্যক্তি তার মনে শান্তি পেত। আমি বললাম, সে আমার সঙ্গে আসুক। আমার ওখানে কিছুদিন থাকলে তার সংশয় নিজ থেকেই দূর হয়ে যাবে। সুতরাং অন্তত ৪০ দিনের জন্য হলেও অন্তরের বোতলে আল্লাহপ্রেমের শরাপ ভরে নাও। তোমার অন্তরে শান্তি আসবে। বড় বড় পীর ও ওলিদের কাছে যাওয়ার সাহস না হলে স্থানীয় আলেমদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলবেন, তাদের সান্নিধ্যে থাকার চেষ্টা করবে। এতে অন্তরের যাবতীয় সংশয়-সন্দেহ দূর হবে, আল্লাহর ভালোবাসা ও মহব্বত বৃদ্ধি পাবে, নেক আমলের আগ্রহ তৈরি হবে এবং সর্বোপরি আল্লাহর নৈকট্য নসিব হবে।

 

অনেকের মনে ভয় কাজ করে, আলেমদের পরামর্শে চললে তারা আমাদেরকে দুনিয়া উপার্জন করতে দেবে না। এতে পার্থিব জীবন অচল হয়ে যাবে এবং ঘর-সংসার ধ্বংস হবে। তাদের ধারণা অমূলক। আলেমরা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করতে বলেন, তারা পার্থিব জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় উপার্জন ত্যাগ করতে বলেন না। তারা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করতে বলেন, কেননা হাদিসে দুনিয়ার ভালোবাসা ও মোহকে সব পাপের মাথা বা মূল বলা হয়েছে।

 

আল্লাহ আমাদের সবাইকে দ্বিনের সঠিক জ্ঞান, বুঝ ও আমল দান করুন। আমিন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এজাতীয় আরো নিউজ দেখুন
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!